ভালবাসায় আমার এ্যালার্জি
আছে,ভালবাসি
যদি বলি কাল বলবে রুমে চল।আমি ওসব
লুতুপুতু প্রেম করতে চাইনা তাই
ভাবাভাবির
কোন ব্যাপার নাই।কি সাংঘাতিক মেয়ে
একমাস ভেবে এই উত্তর দিয়ে বলে
ভাবাভাবির সময় নাই।রাগে ক্ষোভে
চরিত্র
নিয়ে কথা বলল বলে দিলাম ঝাড়ি।আর কি
ভ্যা ভ্যা করে কাঁদছে পিচ্চিদের মত।
মুশকিল
তো এত বড় মেয়ে ক্যাম্পাসে কাঁদছে।হাত
ধরে টেনে বের করে বাইরে এসে বললাম
চল
ফুসকা খাই।নাহ মহারানীর তেজ
বেড়েছে,একটানে হাতছাড়িয়ে নিয়ে
বলে তুমি
আমার কে হও শুনি তোমার সাথে ফুসকা
খাব
কেন?যেতে বলছি বলে আবার হাত ধরে
টেনে
নিয়ে গেলাম।তখনই বুঝেছিলাম প্রেমে না
পড়লে অচেনা একটা ছেলে কোন মেয়ের
হাত
ধরলে এতক্ষনে মুখে লাল রং ধারন করত
কিন্তু আমার তো হয়নি তাহলে নিশ্চয়ই...
এরপর প্রেম হয়ে গেল।পড়াশোনা শেষ তবু
বেকার।আম্মুর গলা জড়িয়ে ধরতে ধরতে
হাতের চামড়া উঠে গেছে।আম্মু বিয়ে
করব।
কিন্তু উনার এক কথা,বেকার ছেলে বিয়ে
দিবেন
না।তাছাড়া আব্বুর অনুমতি ছাড়া বিয়ে
হবেনা।
তাই গত একসপ্তাহ ধরে আব্বুর খেদমত
করতে করতে আম্মুর রিকুয়েষ্টে রাজি হল
ইপ্সিতাকে দেখতে যাবে।কিন্তু পছন্দ না
হলে
কাল থেকে আব্বুর ব্যাবসায় জয়েন করতে
হবে।আর পছন্দ হলে বিয়ের পরদিন থেকেই
জয়েন করতে হবে।কি জ্বালা আর ফ্রি
থাকা
হল না।আজকেই আব্বু আম্মু গিয়েছিলেন
ইপ্সিতাকে দেখতে।খুব পছন্দ হয়েছে ওকে।
হতেই হবে আমি কি কখনও খারাপ কিছু
চয়েস
করি নাকি।যাই হোক মেয়েটি মেক-আপ
ছাড়াই সুন্দর।আব্বুর খুব ভাল লেগেছে।
বাসায়
এসে আম্মুর কাছ থেকে গোপনসূত্রে খবর
পেয়েছি।একটু পরেই আব্বু ফোন দিয়ে ডেট
ফিক্সড করবে।তাই ভাবলাম পাগলীটাকে
একটু
রাগিয়ে দেই।কিন্তু মনে হল একটু বেশিই
হয়ে
গেছে।
.
সন্ধ্যা নেমেছে মাত্র।খুশিতে বিছানায়
শুয়ে
একটু আরাম করছি আর ভবিষ্যতের
দিনগুলোর কথা চিন্তা করছি।হঠাৎ
ফোনটা
বেজে উঠেছে।স্ক্রীনে তাকিয়ে দেখি
সুমি।
ইপ্সিতার ফ্রেন্ড।
-হ্যালো(আমি)
-হ্যালো ভাইয়া আপনি কোথায়?
-এইতো বাসায় কেন?
-আপনি কিছু জানেন না?
-না তো।(অবাক হয়ে বললাম,অবাক হওয়ারই
কথা)
-ইপ্সিতা সুইসাইড করতে গিয়েছিল,ওর
আম্মু
দেখে ফেলছে এখন অনেক অসুস্থ।
-কিইইই বললে তুমি।(কেমন জানি খুব
খারাপ
লাগল)
-হ্যা ভাইয়া দেরি না করে তাড়াতাড়ি ওর
বাসায় যান।
-হ্যা।
খুব খারাপ লাগছে,মেয়েটি সত্যি সত্যি
যদি
উল্টা পাল্টা কিছু করে ফেলে তাহলে
নিজেকে
ক্ষমা করতে পারব না।
তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পড়লাম।
কিছুক্ষন পর ওদের বাসায় পৌছে কলিং
বেলে
চাপ দিলাম।
একটু পর দরজা খুলল আমার হবু
শাশুড়ি,কেমন যেন অবাক দৃষ্টিতে
তাকালেন।
দুদিন পর বিয়ে যার সাথে সে আজ
বেহায়ার
মত শ্বশুর বাড়ি এসেছে।কিন্তু উনার চোখে
মুখে তেমন কোন আভাস পেলাম না।সন্তান
অসুস্থ থাকলে মায়েদের মুখটাও ভারী
থাকে।
কিন্তু উনাকে দেখে তেমন মনে হচ্ছেনা।
যাই
হোক জিজ্ঞাসা করলাম,ইপ্সিতা
কোথায়?
একন কেমন আছে।কিছু সময় ভ্রুঁ কুঁচকে থেকে
জবাব দিলেন ওর রুমে।
দৌড়ে ওর রুমে গেলাম,গিয়ে তো ভুত
দেখলাম,যে অসুস্থ সে কিনা নখে
নেইলপলিশ
লাগাচ্ছে।
-তুমি নাকি সুইসাইড করতে গিয়েছিলে?
(হাপাত
ে হাপাতে বললাম)
-আমার দিকে একটু তাকিয়ে আবার নিজ
কাজে
মন দিল।
-আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করেছি?
-হ্যা বলো।
-তুমি নাকি সুইসাইড করতে গিয়েছিলে?
-কে বলল?
-সুমি।
-মিথ্যে বলেছে।
-কেন?
-আমি বলতে বলেছিলাম তাই।
-মানে?
-তুমি আমাকে যেমন মিথ্যে বলে
কাঁদিয়েছ
আমিও তোমাকে কষ্ট দিলাম এটা তোমার
শাস্তি।আঙ্কেল ফোন করে বলেছে
আমাকে
উনার খুব ভাল লেগেছে।
-তাই বলে এতটা মিথ্যে।
-তুমিও কম বলনি।আমিও অনেক কষ্ট
পেয়েছি।
-চুপ একেবারে।
-তুমি চুপ।
-দিলাম ঠাশ করে একটা।এতটা বেহায়া
হবে
কেন।ও জানে আমি কতটা ভয় পেয়েছি।
কাঁদছে
কাঁদুক।আমি বেরিয়ে পড়লাম।
.
পাঁচদিন পর আমাদের বিয়েটা সম্পন্ন হল।
হাসি মুখেই বিয়েটা করল।কিন্তু আমি তো
জানি সেদিন চড় মেরেছি কিছু
বলেনি,তার
প্রতিশোধ যেভাবেই হোক নিবে।আর যা
ভেবেছিলাম ঠিক তাই হল।সারাদিন কষ্ট
শেষে
বিয়ে করে যেইনা আব্বু বলল শুভ্র খেয়ে
নাও।
অমনি সবার সামনে চিৎকার করে বলে উঠল
আব্বু ওর তো এসিটিডি হয়েছে।এখন খেলে
সমস্যা হবে।তাই নাকি শুভ্র।সকলের
সামনে
কি আর বলব পেটে ক্ষুধা থাকলেও মাথা
নাড়তে হল মান ইজ্জতের ভয়ে।কি
সাংঘাতিক
মেয়ে একটা থাপ্পড়ের প্রতিশোধ এভাবে
নিবি।আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি
হাসছে।
প্রচন্ড ক্ষুধা আর বিরক্তি নিয়ে রুমে
গিয়ে
শুয়ে পড়লাম।এ পাশ ও পাস করতে করতে
কখন ঘুমিয়ে গেছি বুঝতে পারিনি।ঘুম
ভাঙল
ইপ্সিতার ডাকে...
-এই শুনছ উঠ উঠ তো
-কি হল আবার।(কোনভাবে চোখ মেলে
তাকিয়ে বললাম)
-খাবে উঠ।
-কি খাব?
-কি খাবে মানে রাতের খাবার খাবে।
-ফাজলামি পাইছ।তখন সবার সামনে ওরকম
বলে এখন ডাকছ খেতে খাবনা।
-এত রাগ কর কেন তুমি?
-মোটেও রাগ করিনি।
-এই আমি তো ইয়ার্কি মেরে
বলেছিলাম,জানিনা তো আমার
জামাইয়ের
এত রাগ।
-জাননা জানতে হবে না।
-আচ্ছা ঠিক আছে জানব না।এখন খেয়ে
নাও
তো।
-খাব না বলেছি না?
-খেতে হবে
-না।
-তাহলে আমিও খাব না।
-ওকে খেওনা।
-এবার চোখে পানি ভরে গেছে,খাওনা
বাবু
প্লিজ,আমি মাফ চাইছি তো।
-কান্নামুখটা আমি দেখতে চাইনা।
-বামহাত দিয়ে পানি মুছে ডান হাত ভাত
মেখে
আমার মুখের সামনে ধরল।
-আমি কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে মুখে
নিলাম
খাবার।এবার তুমি খাও।
-হুম।
খাওয়া শেষ করে বসে আছি ব্যালকুনিতে।
চাঁদ
জোৎস্না আরও প্রিয় হয়ে উঠেছে প্রিয়
মানুষটির ছোঁয়া পেয়ে।আলতো করে কাঁধে
মাথা রেখেছে।আমি গভীর রাতের
হাওয়াদের
সাথে ওর চুলের ঘ্রান নিচ্ছি।এতটা মায়া
এতটা
মায়াবী এর আগে কখনও দেখিনি।সারাটি
জীবন
এমনিভাবেই পাশে থাকতে চাই।।।
.
.
.
(সমাপ্ত)
1 মন্তব্যসমূহ
Tnxx Vai
উত্তরমুছুন